নিষেক (Fertilization) (11.2.3)

নবম-দশম শ্রেণি (মাধ্যমিক) - জীববিজ্ঞান (নতুন সংস্করণ) জীবের প্রজনন | - | NCTB BOOK
132
132

পরাপায়নের ফলে পরিণত পরাগরেণু গর্ভপত্রের গর্ভমুণ্ডে (Style) পতিত হয়। এরপর পরাগনালিকা বৃদ্ধিপ্রাপ্ত হয়ে গর্ভদণ্ড ভেদ করে এবং কিছু তরল পদার্থ শোষণ করে স্ফীত হয়ে উঠে। এক সময় এ

চিত্র 11.09: সপুষ্পক উদ্ভিদের জীবন চক্র

স্ফীত অগ্রভাগটি ফেটে পুংজনন কোষ দুটি সুপখলিতে মুক্ত হয়। এর একটি ডিম্বাণুর সাথে মিলিত হয়ে জাইগোট (Zygote) তৈরি করে। অপর পুংজনন কোষটি গৌণ নিউক্লিয়াসের সাথে মিলিত হয়ে ট্রিপ্লয়েড (3n) সস্য কোষের (Endosperm cells) সৃষ্টি করে।
প্রায় একই সময়ে দুটি পুংজনন কোষের একটি ডিম্বাণু এবং অপরটি পৌপ নিউক্লিয়াসের সাথে মিলিত হয়। এ ঘটনাকে দ্বিনিষেক (Double fertilization) বলা হয়।

নতুন স্পোরোফাইট গঠন (Development of new sporophyte)
জাইগোট কোষটি স্পোরোফাইটের প্রথম কোষ। এর প্রথম বিভাজনে দুটি কোষ সৃষ্টি হয়। একই সাথে সস্যের পরিস্ফুটনও ঘটতে শুরু করে। জাইগোটের বিভাজন অনুপ্রন্থে (Transversely) ঘটে। ডিম্বকরন্দ্রের দিকের কোষকে ভিত্তি কোষ (Basal cell) এবং ৰূণথলির কেন্দ্রের দিকের কোষটিকে এপিক্যাল কোষ (Apical cell) বলা হয়। একই সাথে এ কোষ দুটির বিভাজন চলতে থাকে। ধীরে ধীরে এপিক্যাল কোষটি একটি ভ্রুণে পরিণত হয়। একই সাথে ভিত্তি কোষ থেকে মুণধারক (Suspensor) গঠন করে। ক্রমশ বীজপত্র, ভূণমূল এবং ভ্রুণকাণ্ডের সৃষ্টি হয়। ক্রমান্বয়ে গৌণ নিউক্লিয়াসটি সস্যটিস্যু উৎপন্ন করে। এই সস্য কোষগুলো ট্রিপ্লয়েড অর্থাৎ এর নিউক্লিয়াসে 3n সংখ্যক ক্রোমোজোম থাকে। পরিণত অবস্থায় ডিম্বকটি সস্য ও ভূণসহ বীজে পরিণত হয়। এ বীজ অঙ্কুরিত হয়ে একটি পূর্ণাল স্পোরোফাইটের সৃষ্টি করে।

চিত্র 11.10: ডিম্বকের গঠন ও নিষেক প্রক্রিয়া

অতএব দেখা গেল, একটি সপুষ্পক উদ্ভিদের জীবনচক্রে স্পোরোফাইট এবং গ্যামেটোফাইট নামে দুটি পর্যায় একটির পর একটি চক্রাকারে চলতে থাকে।


ফলের উৎপত্তি
আমরা ফল বলতে সাধারণত আম, কাঁঠাল, লিচু, কলা, আঙুর, আপেল, পেয়ারা, সফেদা ইত্যাদি সুমিষ্ট ফলগুলোকে বুঝি। লাউ, কুমড়া, ঝিঙা, পটল ইত্যাদি সবজি হিসেবে খাওয়া হলেও প্রকৃতপক্ষে এগুলো সবই ফল। নিষিক্তকরণ প্রক্রিয়া শেষ হলেই ফল গঠনের প্রক্রিয়া শুরু হয়। নিষিন্তুকরণ প্রক্রিয়া পর্ভাশয়ে যে উদ্দীপনার সৃষ্টি করে, তার কারণে ধীরে ধীরে এটি ফলে পরিণত হয় এবং এর ডিম্বকগুলো বীজে রূপান্তরিত হয়। নিষিক্তকরণের পর গর্ভাশয় এককভাবে অথবা ফুলের অন্যান্য অংশসহ পরিপুষ্ট হয়ে যে অঙ্গ গঠন করে, তাকে ফল বলে।
শুধু গর্ভাশয় ফলে পরিণত হলে তাকে প্রকৃত ফল বলে, যেমন: আম, জাম। গর্ভাশয়সহ ফুলের অন্যান্য অংশ পুষ্ট হয়ে যখন ফলে পরিণত হয়, তখন তাকে অপ্রকৃত ফল বলে, যেমন: আপেল, চালতা ইত্যাদি। সব প্রকৃত এবং অপ্রকৃত ফলকে আবার তিন ভাগে ভাগ করা যায়, যেমন: সরল ফল, গুচ্ছ ফল এবং যৌগিক ফল।

common.content_added_by
টপ রেটেড অ্যাপ

স্যাট অ্যাকাডেমী অ্যাপ

আমাদের অল-ইন-ওয়ান মোবাইল অ্যাপের মাধ্যমে সীমাহীন শেখার সুযোগ উপভোগ করুন।

ভিডিও
লাইভ ক্লাস
এক্সাম
ডাউনলোড করুন
Promotion